
প্রকাশিত: Sat, Apr 8, 2023 2:22 PM আপডেট: Wed, Jun 25, 2025 5:05 AM
কুলষিত শিক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে কীভাবে জাতিকে সুন্দর করে গড়ে তুলবো
অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন : ছাত্রছাত্রীদের বলছিলাম, লাইব্রেরিতে পড়াশোনা করার উপকারিতার কথা। আর বলছিলাম, আমি বা আমরা যখন ছাত্র ছিলাম তখন নিয়মিত লাইব্রেরি যেতাম। ওখানে গিয়ে ক্লাসে যেই বই ফলো করতো তার বাইরে অন্য বইগুলো নিয়ে বসতাম, পড়তাম এবং সেগুলো থেকে নোট তৈরি করতাম। ছাত্ররা তখন একযোগে বলে উঠলো যে, স্যার এখন তো লাইব্রেরিতে গিয়ে পড়ার পরিবেশ নই, বসার স্থান পাওয়া কঠিন। সেখানে সবাই বিসিএস প্রস্তুতির জন্য সকালবেলাই লাইন দিয়ে সমস্ত জায়গা দখল করে ফেলে। নিয়মিত ছাত্রছাত্রীদের জন্য আর কোনো জায়গা থাকে না। আমি শুনে আশ্চর্য। একটা বিশ্ববিদ্যালয় কি এমন হতে পারে?
ছাত্ররা লাইব্রেরিতে যাবে না, ক্লাসে শিক্ষক যে বই ফলো করে সেই বই দেখবে না, সেই বইয়ের বাইরে সেই বিষয়ের অন্য বই পড়বে না, বিভিন্ন দৈনিক ও ম্যাগাজিন পড়বে না। একি হতে পারে? আমার কন্যা প্রায় প্রতিদিন রাত ১২টা বা তার বেশি সময় পর্যন্ত লাইব্রেরিতে পড়ে। ওখান থেকেই ফোন করে একটু কথা বলে। হলের রুম শুধু ঘুমাবার জন্য ব্যবহার করে। লাইব্রেরিতে বসেই ক্লাসের পড়া পড়ে, এসাইনমেন্ট তৈরি করে। দৈনিক পত্রিকা ও ম্যাগাজিন পড়ে। এই যে চলমান ছাত্ররা যে যেই বিষয়ে পড়ে সেই বিষয়ের বই পড়তে লাইব্রেরিতে যাচ্ছে না এর ক্ষতিকর ইমপ্যাক্ট কি আমরা বুঝতে পারছি? এর দায় কর্তৃপক্ষের। তারা চলিত ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য একটা লাইব্রেরি দিতে পারেনি যেখানে বসে চলিত ছাত্ররা পড়বে। লাইব্রেরি হয়ে গেছে বিসিএস এর গাইড পড়ার জন্য। পৃথিবীতে এমন দেশ বা বিশ্ববিদ্যালয় আর দ্বিতীয়টি পাবেন?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোটামোটি মানের বিশাল একটি লাইব্রেরি আছে। আমি যখন ছাত্র ছিলাম তখন দেখেছি সমসাময়িক জার্নাল ও বইয়ে যতটা না সমৃদ্ধ তার চেয়ে বেশি সমৃদ্ধ পুরাতন জার্নাল ও বইয়ে। অর্থাৎ একটা সময় ছিলো যখন পদার্থবিজ্ঞানের সেরা জার্নালগুলো রাখতো। আমি যখন ছাত্র তার বেশ আগে থেকেই সমসাময়িক জার্নাল কেনা বা রাখা বন্ধ হয়ে যায়। নতুন কিছু অল্প স্বল্প যাওয়া যেতো সেগুলো হয় ফ্রি ছিলো না হয় ডোনেশন ছিলো। তারপরেও তখন একটা পত্রিকা ও ম্যাগাজিন সেকশন ছিলো সেখানে নিউজউইক, নিউ সায়েন্টিস্ট ইত্যাদি রাখা হতো। এছাড়া নিয়মিত দৈনিক পত্রিকাগুলো রাখা হতো। এসব না পড়লে একজন ছাত্র পূর্ণাঙ্গ শিক্ষার্থী হিসাবে গড়ে উঠতে পারে না। এই যে লাইব্রেরি সত্যিকারের লেখাপড়া বাদ দিয়ে চাকরির জন্য গাইড পড়ছে এতে পুরো লেখাপড়ার সিস্টেমটাই কুলষিত হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে নিয়মিত ছাত্ররা লাইব্রেরিতে যেতে পারছে না। ফলে এরা বড় ভাইয়ের... পড়া আর ফটোকপি পড়ার সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে যা সভ্য দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে কল্পনাও করা যায় না। এই কুলষিত শিক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে আমরা কীভাবে আমাদের জাতিকে সুন্দর করে গড়ে তুলব? এই সমস্যার সমাধানের দায়িত্ব এবং ক্ষমতা আছে যাদের তারা কী ভাবছে এইটা নিয়ে? লেখক: শিক্ষক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়
আরও সংবাদ
চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে
‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!
কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!
সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি
ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
মতিউর প্রতিদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৮৩ ব্যাচের বন্ধুদের গ্রুপে সৎ জীবন যাপনের উপদেশ দিতেন!

চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে

‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!

কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!

সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি

ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
